লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় মাদক সেবনকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ায় ফরহাদ হোসেন (২৪) নামের এক সাংবাদিককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে।
আহত সাংবাদিক ফরহাদ হোসেন হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছেন।
রোববার(২৫ জুন) দুপুরে ভুক্তভোগী সাংবাদিক ফরহাদ হোসেন বাদী হয়ে চারজনের নাম উল্লেখ করে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন।
এর আগে শনিবার রাতে উপজেলার বড়খাতা বাজারের ডাচবাংলা ব্যাংকের সামনে মারধরের শিকার হন ওই সাংবাদিক।
অভিযুক্তরা হলেন, উপজেলার বড়খাতা এলাকার বুলু মিয়ার ছেলে সেলিম সম্রাট (৩০), উপজেলা সেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক সুলতান আহমেদ রাজন (৩৮), একই এলাকার আনিছুর রহমানের ছেলে মাসুদ মিয়া (৩২) ও জামাল হোসেন।
আহত ফরহাদ হোসেন রংপুর টাইমস অনলাইনের নিজস্ব প্রতিবেদক হিসেবে কাজ করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শনিবার দুপুরে উপজেলার পশ্চিম সাড়ডুবি এলাকার দুই নম্বর পুলের উপর একটি ইজিবাইক থেকে বেশ কয়েকটি ফেনসিডিলের বোতল মাটিতে পড়ে যায়। পড়ে যাওয়া ফেনসিডিলের বোতল গুলো স্থানীয়রা তুলে নেয়। এ সময় সেলিম সম্রাট সেখানে গিয়ে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে স্থানীয়দের কাছ থেকে বোতল গুলো পুলিশকে দেয়ার কথা বলে নিয়ে সে একটি নিজেই খেয়ে ফেলে। পরে সাংবাদিক ফরহাদ হোসেন এ বিষয়টি জানতে পেরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়। এটিকে কেন্দ্র করে ওই দিন রাত ১০টার দিকে সেলিম সম্রাট, সুলতান আহমেদ রাজন,মাসুদ মিয়া ও জামালসহ কয়েকজন বড়খাতা বাজারে ফরহাদ হোসেনকে আটক করে মারধর করেন। পরে খবর পেয়ে হাতীবান্ধা থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ফরহাদ হোসেনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান।
এ বিষয়ে আহত সাংবাদিক ফরহাদ হোসেন বলেন, সেলিম সম্রাট ফেনসিডিল নিয়ে খেয়েছে তা মানুষের কাছে জেনে ফেসবুকে লেখালিখি করায় আমাকে আটক করে মারধর করেছে। সে নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে মাদকের সাথে কাজ করে আসছে। সে নিজেও একজন মাদকসেবি। আমি থানায় অভিযোগ দিয়েছি। তার শাস্তি দাবি করছি।
এদিকে ঘটনাস্থলে সেলিম সম্রাট ফেনসিডিল সেবনের প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় বাসিন্দা রবিউল ইসলাম বলেন, একটি ইজিবাইক থেকে বেশ কয়েকটি ফেনসিডিল পড়ে যায়। এ সময় স্থানীয়রা তা তুলে নেয়। হঠাৎ সেলিম সম্রাট নামের ওই সাংবাদিক পরিচয়দানকারী যুবক এসে স্থানীয়দের হাত থেকে একটি বোতল নিয়ে নিজেই খেয়ে ফেলে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সেলিম সম্রাট বলেন, খবর পেয়ে ওই এলাকায় যাই। কিন্ত আমি কোন ফেনসিডিল সেবন করিনি। ফরহাদ আমাকে নিয়ে উল্টাপাল্টা কথা ফেসবুকে লিখছে। আমি শুধু তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকি তাকে কোন মারধর করিনি।
এ বিষয়ে হাতীবান্ধা উপজেলা সেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক সুলতান আহমেদ রাজন বলেন, আমি ফরহাদকে কোন মারধর করিনি।
এ বিষয়ে হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহা আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন,এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।